Friday, December 16, 2016

Twin-spotted Tree Frog



লাল,হলুদ, কালো আর  জলপাই রঙের সমন্বয়ে অত্তান্ত সুন্দর এই লাল-পা গেছোব্যাঙ। ব্যাঙটির পিছনের পায়ের পাতা লাল হওয়ার কারনে এবং গাছে থাকে বলে একে বাংলাতে লাল-পা গেছোব্যাঙ বলা হয়।এরা উড়ন্ত গেছো ব্যাঙ নামেও পরিচিত। যার ইংরেজি নাম Twin-spotted Tree Frog, Himalayan Flying Frog ও বৈজ্ঞানিক নাম Rhacophorus htunwini । ব্যাঙটি Rhacophoridae পরিবারের অর্ন্তগত ।


 আকৃতি ও গঠন : মধ্যম আকারের ব্যাঙটি ৩৬ থেকে ৬০ মিলিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। অন্যান্য ব্যাঙের মতোই স্ত্রী ব্যাঙ পুরুষ ব্যাঙের চেয়ে আকারে বড়। প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় এদের পিঠ পাতার মতো সবুজ বা কাঁচা জলপাই রঙের এবং পিঠজুড়েই বিন্দু বিন্দু কালো ফোঁটা দেখা যায়। দেহের দুই পাশেই বুকের সমান্তরালে দুইটি সমান আকৃতির কালো দাগ আছে। হাত ও পায়ের আঙুলগুলোর মাঝে এক ধরনের পাতলা পর্দা দিয়ে জোড়া লাগানো থাকে যাকে ইংরেজিতে ‘ওয়েব’ বলে এবং প্রতিটি আঙুলের অগ্রভাগ গোলাকৃতির হয়। হাতের ওয়েব লালচে হলুদ হলেও পায়ের দিকে তা লাল রঙের। হাত এবং পায়ের আঙুলে এক ধরনের আঠালো পদার্থ থাকে যার সাহায্যে এরা সহজেই গাছের ডাল, বাকল কিংবা পাতায় লেগে থাকতে পারে। এদের গোলাকার চোখের উপরিভাগ কিছুটা হলুদ হয়।

স্বভাব : এরা নিশাচর প্রাণী।দিনের বেলায় গাছের পাতা বা কোটরে লুকিয়ে থাকে । রাতে এরা সক্রিয় হয়। এরা কোনো কারণে ভয় পেলে বা সম্ভাব্য আক্রমণ টের পেলে পিঠের সবুজ রং মলিন হয়ে যায়।তখন পিঠের রঙ ধুসর আকাসি বা ফ্যাকাসে জলপাই রঙের মতো হয়ে যায়। 

 

 খাদ্য তালিকা : উড়ন্ত পোকামাকড় এদের প্রধান খাদ্য । 




প্রজননঃ বর্ষা মৌসুমে  জুন থেকে জুলাই মাসে এদের প্রজনন কাল ।  এরা গাছের পাতায় ডিম পেরে বিশেষ ফেনা দিয়ে তা ডেকে দেয় ।  


বসবাস ও অবস্থান : চিরসবুজ বনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছে এরা বসবাস করে থাকে । বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বের  বনগুলাতে যেমন : লাউয়াছরা, সাতছড়ি, কালেঙ্গা ও আদমপুর, দুধপুকুরিয়া-ধোপাছড়ি ও টেকনাফে দেখা যায়।   



 প্রকৃতিতে এদের ভুমিকা: পোকামাকড় খেয়ে বনের ভারসাম্য রক্ষ্যায় বিশেষ ভুমিকা রাখে।


বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল ১ অনুযায়ী প্রজাতিটি সংরক্ষিত। IUCN এই প্রজাতিটিকে Least concern বা ন্যূনতম বিপদ গ্রস্থ বলে ঘোষণা করেছে।

 PC: 1. Mohammad Quamruzzaman Babu
       2. Prosenjit Debbarma

 তথ্যসূত্রঃ
1. তফসিল -১ ( রক্ষিত বন্যপ্রাণী ) উভচর , বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০,২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা- ১১৮৪৪০ ।
2. Amphibians and Reptiles of Bangladesh - M. Kamrul Hasan , M. Monirul H. Khan , M. Mostafa Feeroz
3. A Guide To Wildlife - M. Monirul H. Khan
4. The IUCN Red List of Threatened Species . ( Amphibians on The IUCN Red List )

No comments:

Post a Comment