বিস্তৃতি
চামড়াঝোলা ব্যাঙ উত্তর-পূর্ব ভারতের নাগাল্যান্ড এবং আসামের নামেরি জাতীয় উদ্যান ও পেখুই বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে দেখা গেছে। এছাড়া ১৯৯৭ সালে মণিপুরে ব্যাঙটি দেখতে পাওয়ার খবর জানা যায়, তবে তা অনিশ্চিত।[২] নেপাল থেকে প্রজাতিটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলায় সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত প্রত্যন্ত রুমানা এলাকায় প্রজাতিটি আবিষ্কার করা হয়েছে।[১]বিবরণ
বান্দরবানের পাহাড়ি বম সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাঙটি ‘ভুন-দর’ নামে পরিচিত। যার বাংলা অর্থ চামড়াঝোলা। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য দেহের দুই পাশের ঝোলানো চামড়া। লাফ দেওয়ার সময় এই চামড়া প্রসারিত করে, যাতে বাতাসে কিছুটা বেশি সময় ভেসে থাকতে পারে। সেকারণে এর ইংরেজি নাম হয়েছে flying frog। মাঝারি আকৃতির এই ব্যাঙের নাকের ডগা থেকে পায়ু পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৬৮ মিলিমিটার। দেহের ওপরের অংশ মেটে-সবুজ আর নিচের অংশ প্রায় সাদা।[১]চিরসবুজ বন ও পাহাড়ি ছড়ায় এদের পাওয়া যায়। ছড়াতেই প্রজনন ঘটে। পুরুষ ব্যাঙ ব্যাঙাচি রক্ষণাবেক্ষণ ও পাহারার ভার নেয়।
বাংলাদেশে ব্যাঙের তালিকায় যোগ হলো আরেকটি নতুন প্রজাতি। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য দেহের দুই পাশের ঝোলানো চামড়া। লাফ দেওয়ার সময় এই চামড়া প্রসারিত করে, যাতে বাতাসে কিছুটা বেশি সময় ভেসে থাকতে পারে। ব্যাঙটির নাম ‘চামড়াঝোলা’ ব্যাঙ।
বান্দরবানের পাহাড়ি বম সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাঙটি ‘ভুন-দর’ নামে পরিচিত। যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় ‘চামড়াঝোলা’। ইংরেজি নাম Khare’s Stream Frog অথবা Indian Flying Frog। বৈজ্ঞানিক নাম Pterorana khare। বিজ্ঞানী কিয়াসেতো এবং খের ১৯৮৬ সালে এই প্রজাতির প্রথম বর্ণনা করেন।
এ মাসের শুরুতে সাপ-ব্যাঙের সন্ধানে গিয়েছিলাম বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অবস্থিত প্রত্যন্ত রুমানা এলাকায়। কেওক্রাডং পাহাড় থেকে কয়েক কিলোমিটার পূর্বে সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এলাকাটি। সেখানে ছোটখাটো চিরসবুজ অরণ্য আছে। তবে ব্যাঙটি পেয়েছি রাতের বেলা একটি পাথুরে ঝিরি বা জলপ্রবাহের মধ্যে। মাঝারি আকৃতির এই ব্যাঙের নাকের ডগা থেকে পায়ু পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৬৮ মিলিমিটার। দেহের ওপরের অংশ মেটে-সবুজ আর নিচের অংশ প্রায় সাদা।
দেহের দুই পাশের ঝোলানো চামড়া এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে একে আমি Pterorana khare হিসেবে শনাক্ত করি। এই ব্যাঙের কয়েকটি ছবি এবং মাপজোকের তথ্য পাঠাই ভারতীয় উপমহাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাঙ বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল দাশ এবং শৈবাল সেনগুপ্তের কাছে। তারা আমার সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
Pterorana khare পৃথিবীর বিরলতম ব্যাঙগুলোর একটি। এটি শুধু উত্তর-পূর্ব ভারতের নাগাল্যান্ড ও আসামের দুটি জায়গায় পাওয়া যায় বলে জানা ছিল। এবার বান্দরবানে পাওয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি কিছুটা বাড়ল। আন্তর্জাতিক সংরক্ষণবাদী সংস্থা আইইউসিএনের মতে, এটি বৈশ্বিক বিপন্ন প্রজাতি।
আমরা গর্বিত যে, বাংলাদেশে এমন দুর্লভ ব্যাঙ পাওয়া গেছে। জরুরি ভিত্তিতে পুরো পার্বত্য চট্রগ্রাম এবং সিলেটের পাহাড়ি এলাকায় জরিপ চালিয়ে বাংলাদেশে এই ব্যাঙের বিস্তৃতি ও সংখ্যা জানা প্রয়োজন, যাতে এর সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
No comments:
Post a Comment